ইসলাম ও বৈরাগ্যবাদ-৩
লিখেছেন লিখেছেন Saidul Karim ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:৫৭:৪২ বিকাল
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর চরম দুর্দশা দেখে সাধারণ ব্যক্তিদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিও বলেন,ইসলামের রীতি-নীতি দিয়ে আধুনিক সমাজ পরিচালনা সম্ভব নয়!
২০১২ সালে দৈবক্রমে সাক্ষাৎ হয় আমাদের পার্শ্ববর্তীইউনিয়নের একজন প্রফেসরের সাথে।তিনি মাদ্রাসা থেকে আলীম পাশ।অর্থাৎ শিক্ষা জীবনের বারোটি বছর কাটিয়েছেন কুরান-হাদীসের সংস্পর্শে।প্রসঙ্গক্রমে কথা হচ্ছিল ইসলামী রাজনীতি ও সমাজ বিনির্মাণ নিয়ে।তিনি খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে আমাদের বললেন,পৃথিবীতে আর কোনোদিন ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।তিনি যুক্তি হিসেবে দেখালেন,হযরত উমর,উসমান ও আলী (র এর নিহতের ঘটনা।তার দৃষ্টিতে এগুলো কোনো শাসনই না! তিনি বেমালুম ভুলে গেলেন,খুলাফায়ে রাশেদিন,তাবয়ীনদের সোনালী সাতশত বছর এবং সভ্যতায় মুসলিমদের অবদানের কথা।তারপর বললেন,ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠায় রত তরুণদের কথা।তারা যে শার্ট-প্যান্ট পড়ে এবং দাঁড়ি ছোট রাখে তা তার ভালো লাগেনা। আমি তাকেবললাম,আপনার যেগুলো ভালো লাগেনা সেগুলো আপনি কেন করেন।অর্থাৎ আপনারও তো দাঁড়ি নেই এবং কেন শার্ট-প্যান্ট পড়েন? এগুলো যদি ইসলামে হারাম হয় মুসলিম হিসেবে আপনার কি উচিত নয় এর সংস্কার কিংবা বন্ধের! তারপর বললাম,আপনি বাম রাজনীতি করেন এবং জানেন ইসলামীরাজনীতি করা ফরয।আপনি ফরয ত্যাগ করে যেভাবে নফল নিয়েটানাটানি করছেন-এতে আপনার সমালোচনা করার যোগ্যাতার ভিক্তি কোথায়! তিনি আর কোনো জবাব দেননি।তাকে এই কথাগুলো বলতে আমার সংকোচ লাগছিল কারণ,আমি তখন দশম শ্রেনির ছাত্র।তার সাথে সেদিন কথা বলে খুব খারাপ লাগছিলো।মনকে বোঝাতে পারতাম যদি তিনি একজন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তি হতেন।এখনো এটি মনে পড়লে আমার প্রশ্ন জাগে,কেন এমন হলো? গলদকোথায়? তিনি মাদ্রাসায় কী পড়েছিলেন।সময় এসেছে মুসলমানদের পশ্চাদপদতার কারণ ভেবে দেখার এবং এ থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজার।আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে এটি উপলব্দি করে স্যার সৈয়দ আমীর আলী তাঁর দ্য স্পিরিট আব ইসলাম গ্রন্থে লিখেছেন-"আজকের মুসলিম বিশ্বের অধ:পতনের কারণ হচ্ছে-ইসলামের মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুতি,মুক্ত চিন্তার প্রয়োগের অভাব,মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ এবং আধুনিক বিশ্বের(বিংশ শতাব্দী) যুগোপযোগী চিন্তাধারার অভাব"।
সম্প্রতিকালে মুসলিমদের মাঝে মুক্তচিন্তা চর্চা দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।তাই আমাদের মস্তিষ্কে সংকীর্ণতা বাসা বাঁধছে।এর অর্থ এই নয় যে,মুক্তচিন্তারনামে নাস্তিকতা,স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতা।রাসূল (স) এর আদর্শ,মহাগ্রন্থআল কুরআনের দিকনির্দেশনার পরিবর্তে পীর সাহেব,খতীব সাহেব,মুরব্বী মহোদয়,ইমাম হুজুর যা বলেন তা ইসলাম আর এটিই ইসলামী জীবনাদর্শের একমাত্র ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে ।মনে করি নিজের গ্রামের খতীব সাহেব যা বলবেন তা পরীক্ষিত সত্য অবশিষ্টগুলো ভ্রান্ত।
৭৫০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১৩৫০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত মুসলিমরা যে জ্ঞান চর্চাকে ইসলামী সমাজের জন্য অপরিহার্য মনে করত আজ শত শত বছর পরে এসে সেগুলোকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক মনে করে মুসলিমরা গবেষণা ও মুক্ত চিন্তা থেকে দূরে থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে একচেটিয়া নেতৃত্বের আসনের সাথে হারিয়েছে বিশ্বের প্রতিপত্তিও।
১১শ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১৩৫০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপ মুসলিমের অংশীদারিত্বে বিজ্ঞান চর্চা করে।১৩৫০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ইউরোপ একক দখলে নেয় এই আসন।বলা যায়,চতুর্দশ শতাব্দি থেকে ইউরোপে বিজ্ঞানেরসোনালি যুগ শুরু হয়।তবু চতুর্দশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দি পর্যন্ত শুধুমাত্র বিজ্ঞান ও স্বাধীন জ্ঞানচর্চার অপরাধে গির্জার যাজকতন্ত্র পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে,"ইউরোপ বিজ্ঞানের স্বর্ণ যুগে এসেই বিজ্ঞান চর্চাকারীদের পুড়িয়েছে।" যার ফলশ্রুতিতে জনসাধারণ ধর্মনিরপেক্ষ হতে বাধ্য হয়।রাষ্ট্র থেকে বিদায় নেই ধর্ম।তারা মনে করে,ধর্ম ও তৎসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শুধু মানুষ পুড়াতে জানে কল্যাণকর কিছু এতে অনুপস্থিত।
যখন খ্রীষ্টান পরোহিতগণ বিজ্ঞানীদের ধর্মদ্রোহিতারঅপরাধে আগুনে পড়িয়ে হত্যা করছিলেন তখন বিশ্বে মুসলিমদের নেতৃত্ব না থাকায় তারা কোনো অবদান রাখতে পারেনি।আর এর শত শত বছর আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ইবনে সিনা (রহ) পাঁচ লক্ষাধিক পৃষ্ঠা সমৃদ্ধ"আল-কানুন" রচনা করে সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছেন।রসায়ন শাস্ত্রের জনক জাবের ইবনে হাইয়ান (রহ) আবিষ্কার করছেন সাইট্রিক এসিড ও এসিডে স্বর্ণ গলানোর ফর্মুলা।অথচ এগুলো তখন ইসলাম বিরোধি গবেষণা হিসেবে চিহ্নিত হয়নি। কিন্তু আজ সে সময়ের শত শত বছর পরে এসে মুসলিমরা মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে ভিডিও বা অডিও তেলাওয়াত শুনলে সওয়াব হবেনা মর্মে ফতওয়া দেন।যা অবর্ণনীয় কষ্টের কারণ। অথচ এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান হলো-যদি মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে অশ্লীল ফিল্ম আর গান শুনলে গোনাহ হয় তবে কুরআন তেলাওয়াত করলে বা শুনলেও সওয়াব হবে।
টেলিভিশন,সিডি,ডিবিডি ও ইন্টারনট ব্যবহারের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে এটি ব্যবহার করা হারাম না হালাল।তাই গড়পড়তা সকল মিডিয়াকে হারাম বলা যায় না।এছাড়াও ইসলামে এমন কতগুলো বিষয় আছে যেগুলোর ব্যবহার ও পদ্ধতির ওপরই হালাল বা হারাম হাওয়া নির্ভর করে।যেমন-নাটক-ফিল্ম, টেলিভিশন,ইন্টারনেট,টেস্টিউবে সন্তান জন্ম দান ইত্যাদি।
পাশাপাশি কিছু মুসলিম মুক্তচিন্তার বিষয়টিকে 'ইসলামে একবিংশ শতাব্দীর নতুন সংযোজন' হিসেবে কটাক্ষ করে এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি আবিষ্কৃত কোনো বিষয় নয় বরং এটি কোরআন হাদীস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি অধিকার ।এ প্রসঙ্গ একটি হাদীস স্মরণীয়-"রাসূল (স যখন মুয়াজ (র কে ইয়েমেনের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিলেন তখন তাকেজিজ্ঞাসা করলেন যে,কিভাবে তিনি শাসনকার্য পরিচালনা করবেন।মুয়াজ বললেন,পবিত্র কুরআনের আলোকে। নবীজী আবার জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি যদি তাতে কোনো নির্দেশনা না পাও,তাহলে? মুয়াজ উত্তর দিলেন, তাহলে সুন্নাহ দ্বারা।নবীজী আবার জিজ্ঞাসা করলেন,যদি তাতে কোনো নির্দেশনা না পাও,তাহলে? মুয়াজ বললেন,তখন আমি আমার বিবেক-বিচার বুদ্ধি দিয়ে সমস্যার সমাধান করব।"
ইসলাম এমন ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠত নয় যাতে শুধু বয়:বৃদ্ধ বিজ্ঞ জনেরা সিদ্ধান্ত দিতে পারে।ইসলাম ইনসাফ ও অত্মত্যাগের ভিত্তিতে নবীন-প্রবীন সকলের মতামত দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করে।ইসলাম অন্ধ অনুগত্য যেমন স্বীকার করেনা তেমনি ব্যক্তির পরিবর্তনের কারণে আনুগত্যের পরিবর্তনও সহ্য করেনা।ইসলাম জীবনের সব ক্ষেত্রে পরামর্শপূর্বক কাজ শুরু করার নির্দেশ দেয়।হযরত উমর (র এর শাসনামলে নবীনেরা প্রবীনদের সামনে কিছু বলতে সংকোচবোধ করলে তিনি নবীনদের উৎসাহ দিয়ে বলতেন,জ্ঞান বয়স অনুপাতে পরিমাপ করা যায় না। বর্তমানে মুসলিমদের মাঝে এটি চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।মানুষের চিন্তার পরিধিকে হত্যা করে কবু অগ্রসর হওয়ার প্রমাণ জগতের ইতিহাসে নেই।ইসলামের ইতিহাসেও তা অনুপস্থিত।
মুসলিমদের ঈমান এমন স্তরে পৌছেছে যে,ইংরেজী পড়লে টেলিভিশন দেখলে ঈমান চলে যায়।নাটক,সিনেমা, সুর মুসলিমরা তৈরী করার পরিবর্তে তারা এর ঘোর বিরোধী।কিন্তু,এগুলোর বিকল্প না দিয়ে এর ব্যবহার থেকে মানুষকে ধর্মের কোড দিয়ে জাহান্নামের ভয় দেখিয়ে কখনো বিরত রাখা সম্ভব নয়।আমাদের ভুললে চলবেনা,শিক্ষক যা পারেনা নাটক-সিনেমা তা পারে।নাটক-সিনেমা কাউকে কিছু গ্রহণ বা বর্জনে বাধ্যকরেনা কিন্তু ক্রমান্বয়ে সিনেমায় প্রদর্শিত দৃশ্যের মত নিজেকে দেখার মানসিকতা সৃষ্টি করে।যার ফলে নাটক-সিনেমার প্রভাবে সমাজে এককালে যা প্রচলিত ছিলনা তার প্রচলন হয়।তাই এগুলো নিরবে মানুষের মনে প্রতিক্রিয়াশীল।এর একটি বাস্তব উদাহরণ ভারতীয় সিনেমা।যার শুরুতে দেখা যায়,বিভিন্ন দেব দেবী এবং ছবির কাহিনীতেও নানানপ্রেক্ষাপটে পূজার দৃশ্য।যা অবলোকন করে অবচেতন মন পূজার নিয়ম এবং দেব-দেবীর নাম শিখে ফেলে।যদি এর বিপরীত কোনো ইসলামীক মনা ব্যক্তি এই সিনেমা-নাটক তৈরী করতেন তাহলে সিনেমার শুরুতে দেখা যেত 'পবিত্র কাবা',মদীনা কিংবা নবী-রাসূলদের স্মৃতি বিজড়িত স্থান।কাহিনির নানান মোড়ে উচ্চারিত হত কুরআনের আয়াতও নামাযের নিয়ম।অনিচ্ছা সত্ত্বেও মানুষের মন ইসলামের বাস্তব সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠত।আবার প্রত্যেক সিনেমায় কুরআন তিলাওয়াত হতে হবে এমনো নয়।সমাজে চলমান বা ঘটমান নানান সমস্যা ও তার ইসলামী ভাবধারার সমাধান নিয়েও হতে নাটক সিনেমা হতে পারে।
আমরা একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে দেখছি,বিশেষ করে আমেরিকা যখন ইসলাম ফোবিয়াই ভুগছিল এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামী পূণজাগরণের সম্ভাবনা রুখতে মুসলিমদের কে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা দরকার হলে তখনই আমেরিকা বিভিন্ন মুসলিম দেশে তথা বিশ্বব্যাপী জঙ্গী,আলকায়েদা নাটকের জন্ম দিল।আর সে নাটকের বলি হল,উসামা বিন লাদেন।এ বিন লাদেন কে সন্ত্রাসী হিসেবেপ্রমাণ করতে শত শত ফিল্ম তৈরী করা হল।২০০০ সালের পর থেকে প্রায় সিনেমায় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে লাদেন কে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।লাদেনের কর্মকান্ডকে মিডিয়া,ফিল্ম,নাটক,ডকুমেন্টারীরমাধ্যমে উপস্থাপন করে গোটা মুসলিম উম্মাহ কে সন্ত্রাসী,মৌলবাদি,সেকেলে,একগুঁয়ে ও সংকীর্ণমনা হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়েছে।অপরপক্ষে মুসলিমরা সে অনুপাতে ফিল্ম-নাটক তৈরী করে প্রচার করতে পারেনি যে,মুসলিমরা কখনো সন্ত্রাসী নয় এবং একজন মাত্র ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে বা অপ্রমাণিত অযুহাতের অভিযোগে কোনো দেশের ওপর আক্রমণ করে সেদেশের নারী,বৃদ্ধা ও শিশুদের হত্যা করাই হলো সন্ত্রাস।
আর এ কাজে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ মুসলিম প্রযোজকদের সাপোর্ট না করায় তারা ইচ্ছা সত্ত্বেও ইসলামী ধ্যান-ধারণা সৃষ্টি করে এমন সিনেমা তৈরী করতে ভয় পায়।যদি ধর্ম বিরোধী ফতওয়ার স্বীকার হতে হয়! তবে তাদের সিনেমা ও নাটক তৈরীর কাজ থেমে থাকেনা।ফলে,তারাতৈরী করছে নগ্ন,অশ্লীল সিনেমা।হয় এদর না ওদর। আমরা একটু সূযোগ করে দিলে যে মেধা ও চিন্তা মানবতার কল্যাণে ব্যয় হতে পারত তা ব্যয় হয় পূঁজিবাদের লাইফ সাপোর্টার হিসেবে।
পুরো লিখা- http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/11163/Saidul%20Karim/72424#.Vmq6TjN-6zM
বিষয়: বিবিধ
১৪২৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু কনটেন্ট ও কনসেপ্ট এর কিছু বিষয় মনে হয়েছে (হয়তো সেভাবে চিন্তাভাবনা করার সুযোগ পান নি) আরোপিত তথা ফ্যাক্টচুয়াল নয়। যেমনঃ
'তারপর বললাম,আপনি বাম রাজনীতি করেন এবং জানেন ইসলামীরাজনীতি করা ফরয।'
>>>> 'ইসলামী রাজনীতি'? - এটা ফরয? এত জোর করে বললেন 'ফরয' - কিন্তু কোন কোরান, হাদীস কিংবা আর্লি স্কলার এর রেফারেন্স দেন নি। ফরয হবার শর্ত সমূহ কিভাবে তা মিট করলো? ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে এ শব্দযুগল তো ইসলামের ইতিহাসেই খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিছু কিছু বিষয়কে স্বাভাবিক ট্রেন্ড ও সাধারন চিন্তাভাবনা প্রসূত মনে হয়েছে, কিন্তু রিয়ালিটির সাথে পুরোটাই দ্বান্ধিক। ইমপ্রাকটিক্যাল। ইচ্ছাকরে আন-ইসলামিক বললাম না।
যেমন নাটক, সিনেমা, ডকুমেন্টারী দিয়ে কাউন্টার দেবার প্রসংগ। কিংবা ইন্টারনেটের ব্যাবহার ইত্যাদি। আপনার সামনে দিগন্ত টিভির উদাহরন আছে। আমার সামনে ফেইসবুক, টুইটার এর ব্যবহার এর উদাহরন আছে। ইসলামের শত্রুর একটা ইনোভেশান - যার ১০০% নিয়ন্ত্রন শত্রুর হাতে - তাকে আপনি ইসলামাইজেশান করতে চান - ইম্প্রাকটিক্যাল, ইমোশনাল চিন্তা, নয়কি? ইসলামের শত্রু ম্যাকডোনাল্ড বানিয়েছে বলে আপনাকে ইসলামিক ম্যাকডোনাল্ড বানাতে হবে কিংবা হাই রেইজ বিল্ডিং বানিয়েছে বলে আপনাকে ইসলামিক্যালী বানাতে হবে, কাগজের ডিসিপটিভ টাকার প্রচলন করেছে বলে ইসলামিক কাগজের টাকা প্রচলন করতে হবে, সুদী ব্যাংক করেছে বলে আপনাকে ইসলামী ব্যাংক বানিয়ে সুদের ব্যাপ্তি ও এক্সপানশান করতে হবে - এ চিন্তাটা হয়তো যথার্থ ছিল - গত শতাব্দীতে। কিন্তু জ্ঞান ও বিজ্ঞান এতটা এগিয়েছে যে সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন ও বুঝেন - ওটা বড় এক ভুল ছিল। কোরান ও হাদীসের সাথে কন্ট্রাডিক্টরী ছিল। এখন সময় হয়েছে শোধরাবার। কিন্তু সংগঠিত ভাইদের বেশীর ভাগ - ওতে এতটাই মজে আছে - ওনার ফারদার পড়ালিখা করতেই চান না।
যাইহোক, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি - আজকের মুসলিম সমাজে সত্যিকারের নলেজ-বেইজড আলেম ওলামাদের কথা বলার কোন জায়গা নেই, গনমানুষের সাথে কমিউনিকেট করার কোন স্কোপ নেই। স্বাভাবিকভাবেই উম্মাহ ট্রু গাইডলাইন পাচ্ছে না।
অন্যদিকে যে সব আলেম ও ওলামা - কমিউনিকেট করার সুযোগ পাচ্ছেন - তারা নিরাপদ বিষয় (ক্রিটিক্যাল কিংবা প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ বাদে) সমূহ (নামাজ রোজা টাইপ) নিয়ে কথা বলছেন। কিংবা তাদের নলেজ একটা পার্টিকুলার এরিয়ায় লিমিটেড - সামগ্রিক উম্মাহর সমস্যাকে এ্যাড্রেস করার মত ক্যাপাসিটি কিংবা আন্ডারস্ট্যান্ডিং তাদের নেই।
স্বভাবতঃই আপনি যা বলছেন, আমি যা বলছি, কিংবা আর একজন যা বলছেন - তা থই পাচ্ছে না, তা এ্যাফেক্টিভ হচ্ছে না - কারন তা সত্যের কাছাকাছি যাচ্ছে না, কারন তা প্রতারিত, দেওলিয়া সম্পন্ন উম্মাহকে ইন্টারনালী টাচ্ করতে পারছে না।
সুন্দর,গঠনমূলক সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ।আশা করি,আগামী পর্বগুলোতেও পাশে থাকবেন।
জাযাকুমুল্লাহ!
মন্তব্য করতে লগইন করুন